ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস | ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস বাংলাদেশ

By Ajker Pathshala

Updated on:

ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস | ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস বাংলাদেশ

ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস ২০২৫: বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় চলাচল মাধ্যম হলো ট্রেন। প্রতিদিন বাংলাদেশে লক্ষ লক্ষ মানুষ ট্রেনে ভ্রমণ করে চলেছে। ট্রেনে ভ্রমণ খরচ কম হলেও ট্রেনে ভ্রমণ এর কিছু ঝামেলা রয়েছে। বর্তমান সময়ে ট্রেনের টিকিট কাটা একটি ঝামেলা পূর্ণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য লম্বা লাইনে দাড়িয়ে থাকা বিরক্তের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ২০২৫ সালের ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস নিয়ে । পাশাপাশি আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো লোকাল ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস, অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস, ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস বাংলাদেশ, ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস ২০২৫ নিয়ে। চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।

এই পোস্ট পড়ূনঃ ঢাকা টু ভাঙ্গা ট্রেনের সময়সূচী ও টিকিটের মূল্য ২০২৫

ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস বাংলাদেশ

বাংলাদেশে ট্রেন ভ্রমণ অন্যতম জনপ্রিয় এবং সাশ্রয়ী চলাচলের মাধ্যম। তবে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করা অনেক সময় ঝামেলাপূর্ণ হয়ে ওঠে, বিশেষ করে ঈদসহ অন্যান্য উৎসবের সময় টিকিট কাটার দীর্ঘ সারি ও সীমিত আসনের কারণে। এই সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশ রেলওয়ে অনলাইন টিকিট ব্যবস্থা চালু করেছে, যা এখন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে আরও সহজ হয়েছে। চলুন দেখে আসা যাক ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস।

বাংলাদেশ রেলওয়ে গ্রাহকের সুবিধা চিন্তা করে ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য মোবাইল অ্যাপস নিয়ে এসেছে। রেল সেবা অ্যাপটি বাংলাদেশ রেলওয়ের অফিশিয়াল ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপ এই অ্যাপস  দিয়ে খুব সহজেই আপনারা ঘরে বসেই আপনাদের হাতের মোবাইল ফোন দিয়ে ট্রেনের টিকিট কাটতে পারবেন।

এই পোস্ট পড়ূনঃ আজকের ট্রেনের সময়সূচী ২০২৫

মোবাইলে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম ২০২৫

  • প্রথমে Google Play Store বা Apple App Store থেকে Rail Sheba অ্যাপটি ডাউনলোড করুন। নতুন ব্যবহারকারী হলে সাইন আপ (Sign Up) করে একটি একাউন্ট খুলুন। (মোবাইল নম্বর ও জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা জন্ম নিবন্ধন নম্বর লাগবে)। একাউন্ট ভেরিফাই করার জন্য মোবাইলে পাওয়া ওটিপি (OTP) কোড দিয়ে লগইন করুন।
  • লগইন করার পর “Buy Ticket” অপশনে যান। ট্রেনের যাত্রার তারিখ, স্টেশন (যাত্রা শুরু ও গন্তব্য), ক্লাস (শোভন, এসি, স্নিগ্ধা ইত্যাদি) নির্বাচন করুন। নির্দিষ্ট ট্রেনের তালিকা থেকে পছন্দের ট্রেন ও সিট নির্বাচন করুন।
  • টিকিটের মূল্য পরিশোধ করতে বিকাশ, নগদ, রকেট, ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড বা অন্যান্য অনলাইন পেমেন্ট অপশন নির্বাচন করুন।সফলভাবে পেমেন্ট সম্পন্ন হলে আপনার মোবাইলে ই-টিকিট চলে আসবে।ট্রেনের ভেতরে টিকিট দেখিয়ে যাতাযাত করুন।

অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস

বর্তমানে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় অ্যাপস রয়েছে, যা যাত্রীদের সময় ও ভোগান্তি কমিয়ে সহজেই টিকিট সংগ্রহের সুযোগ করে দিচ্ছে। বাংলাদেশে রেল সেবা অ্যাপটি সরকারি ও নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা বাংলাদেশ রেলওয়ের অফিশিয়াল টিকিট বুকিং সেবা প্রদান করে। এটি ব্যবহার করে যাত্রীরা ঘরে বসেই তাদের পছন্দের ট্রেন, সিট এবং গন্তব্য নির্বাচন করে অনলাইনে পেমেন্টের মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ করতে পারেন।

আন্তর্জাতিকভাবে IRCTC Rail Connect (ভারতের জন্য), Trainline (ইউরোপের জন্য) এবং Omio (বিভিন্ন দেশের ট্রেন, বাস ও ফ্লাইট বুকিংয়ের জন্য) ব্যাপক জনপ্রিয়। এই অ্যাপগুলো ব্যবহার করে যাত্রীরা সহজেই ট্রেনের সময়সূচি দেখতে পারেন, লাইভ ট্রেন ট্র্যাকিং করতে পারেন এবং ডিজিটাল টিকিট ব্যবহার করে কাগজবিহীন ভ্রমণ করতে পারেন। অধিকাংশ অ্যাপসই বিকাশ, নগদ, রকেট, ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড ও অন্যান্য অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে টিকিট কেনার সুবিধা দেয়।

ট্রেন টিকিটিং অ্যাপগুলো ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য ভীষণ সুবিধাজনক, কারণ এগুলো সময় সাশ্রয় করে এবং টিকিট কাটার প্রক্রিয়াকে সহজ করে তোলে। ফলে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটার ঝামেলা করতে হয় না।

লোকাল ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস

বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের চলাচলের সেরা মাধ্যম হলো লোকাল ট্রেনলোকাল ট্রেন প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের যাতায়াতের অন্যতম প্রধান মাধ্যম হলেও, এখনো এর জন্য নির্দিষ্ট কোনো অনলাইন টিকিটিং অ্যাপ চালু হয়নি। তবে বাংলাদেশ রেলওয়ের রেল সেবা অ্যাপের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু আন্তঃনগর ও মেইল ট্রেনের টিকিট কেনা সম্ভব। তবে সম্পূর্ণ লোকাল ট্রেনের টিকিট কাটার সুবিধা এখনো ডিজিটালভাবে সংযুক্ত হয়নি। বর্তমানে যাত্রীরা লোকাল ট্রেনের টিকিট সাধারণত স্টেশনের কাউন্টার থেকেই সংগ্রহ করতে হয়।

তবে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ রেলওয়ে যদি লোকাল ট্রেনের জন্য আলাদা ডিজিটাল টিকিটিং সেবা চালু করে, তাহলে এটি যাত্রীদের জন্য আরও সুবিধাজনক হবে। অনলাইন টিকিট বুকিং ব্যবস্থা চালু হলে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটার ঝামেলা কমবে, সময় বাঁচবে এবং ভ্রমণ আরও সহজ হবে। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে লোকাল ট্রেনের টিকিটিং ব্যবস্থা অনলাইনে নিয়ে আসে, তাহলে এটি রেল যাত্রীদের জন্য একটি বড় সুবিধা হবে।

অনলাইনে ট্রেনের টিকিটের দাম

বাংলাদেশে ট্রেনের টিকিটের দাম রুট, ট্রেনের ধরন এবং আসন শ্রেণির ভিত্তিতে পরিবর্তিত হয়। সাম্প্রতিক সময়ে কিছু রুটে টিকিটের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার শ্রেণির ভাড়া ৩৪৫ টাকা থেকে বেড়ে ৪০৫ টাকা হয়েছে, এবং এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির আসনের ভাড়া ৬৫৬ টাকা থেকে বেড়ে ৭৭৭ টাকা হয়েছে। ঢাকা-সিলেট রুটে পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন শ্রেণির ভাড়া ৩২০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৭৫ টাকা হয়েছে, এবং এসি টিকিটের দাম ৬১০ টাকা থেকে বেড়ে ৭১৯ টাকা হয়েছে।ঢাকা-রাজশাহী রুটে সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া যথাক্রমে ৩৪০ ও ৬৫৬ টাকা থেকে বেড়ে ৪০৫ ও ৭৭১ টাকা হয়েছে।

শেষ কথা

বর্তমান প্রযুক্তিনির্ভর যুগে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস যাত্রীদের জন্য এক বিশাল সুবিধা এনে দিয়েছে। এসব অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসেই টিকিট কেনা, ট্রেনের সময়সূচি জানা, আসন নির্বাচন এবং ডিজিটাল পেমেন্ট করা সম্ভব, যা সময় ও ভোগান্তি কমিয়ে যাত্রাকে আরও স্বাচ্ছন্দ্যময় করেছে। বাংলাদেশে “রেল সেবা” অ্যাপ সরকারিভাবে ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য নির্ভরযোগ্য একটি প্ল্যাটফর্ম, যদিও লোকাল ট্রেনের জন্য এখনো আলাদা কোনো অনলাইন সেবা চালু হয়নি।ভবিষ্যতে এই সেবার পরিধি আরও বিস্তৃত হলে এবং উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা হলে যাত্রীদের অভিজ্ঞতা আরও উন্নত হবে। অনলাইন টিকিটিং ব্যবস্থার প্রসার রেলওয়ের আধুনিকায়নের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা দেশব্যাপী ট্রেন যাতায়াতকে আরও সহজ ও কার্যকর করবে।

 

1 thought on “ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস | ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস বাংলাদেশ”

Leave a Comment